ইশতেহার
জনতার দল
সাম্য, ন্যায়, প্রগতি
ভূমিকা
জনতার দল বাংলাদেশের জনগণের স্বপ্ন ও আকাঙ্ক্ষার প্রতিনিধিত্ব করে। আমরা বিশ্বাস করি যে, স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা এবং জনকল্যাণমুখী নীতির মাধ্যমে বাংলাদেশকে একটি আধুনিক, সমৃদ্ধ এবং আন্তর্জাতিক মানের রাষ্ট্রে রূপান্তর করা সম্ভব। এই ইশতেহারে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি, মূলনীতি এবং অর্থনৈতিক, সামাজিক, শিক্ষাগত, পরিবেশগত ও সাংস্কৃতিক উন্নয়নের জন্য সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা তুলে ধরা হয়েছে।
দৃষ্টিভঙ্গি
প্রযুক্তি, ন্যায়বিচার এবং অংশগ্রহণমূলক গণতন্ত্রের মাধ্যমে বাংলাদেশকে একটি আত্মনির্ভর, দুর্নীতিমুক্ত এবং বৈশ্বিক মানের রাষ্ট্রে রূপান্তর করা, যেখানে প্রতিটি নাগরিকের মর্যাদা, সুযোগ এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে।
মূলনীতি
- ন্যায় ও সুশাসন
- অর্থনৈতিক স্বাধীনতা
- গণতান্ত্রিক বিকেন্দ্রীকরণ
- শিক্ষা ও মানবসম্পদ
- জাতীয় নিরাপত্তা
- বশক্তির ক্ষমতায়ন
- পরিবেশ ও টেকসইতা
- সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য
○ স্বচ্ছ, জবাবদিহিমূলক এবং দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন গড়ে তোলা।
○ কৃষি, শিল্প ও প্রযুক্তির সমন্বয়ে বৈচিত্র্যময় এবং স্বনির্ভর অর্থনীতি সৃষ্টি।
○ স্থানীয় সরকারের ক্ষমতায়ন এবং দ্বি-কক্ষবিশিষ্ট সংসদ প্রতিষ্ঠা।
○ নৈতিকতা ও আধুনিক বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষার মাধ্যমে দক্ষ জনশক্তি তৈরি।
○ আত্মনির্ভর প্রতিরক্ষা এবং সাইবার নিরাপত্তা জোরদার।
○ তরুণদের জন্য শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি।
○ জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা এবং প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ।
○ বাঙালি সংস্কৃতির প্রচার ও সংরক্ষণের মাধ্যমে জাতীয় পরিচয় শক্তিশালীকরণ।
রাজনৈতিক কাঠামো ও সংস্কার
দলের কাঠামো
- কেন্দ্রীয় কমিটি: অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ, পেশাজীবী ও তরুণ প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত।
- নীতিনির্ধারক পরিষদ: অর্থনীতি, শিক্ষা, প্রতিরক্ষা ও প্রশাসন বিশেষজ্ঞদের দ্বারা নীতি প্রণয়ন।
- স্থানীয় শাখা: ইউনিয়ন থেকে জেলা পর্যায়ে গণমুখী নেতৃত্ব গঠন।
- এথিক্স কমিটি: দলের সদস্যদের নৈতিকতা ও সততা নিশ্চিত করতে স্বাধীন তদারকি।
সংস্কার পরিকল্পনা
- রাজনৈতিক দলগুলোতে পরিবারতন্ত্র নিষিদ্ধকরণ ও গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়া চালু।
- নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতা ও ক্ষমতা বৃদ্ধি।
- জনমত জরিপ ও সরাসরি জনগণের অংশগ্রহণের মাধ্যমে সংসদীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ।
- রাজনৈতিক অর্থায়নে স্বচ্ছতা ও দুর্নীতি প্রতিরোধে কঠোর আইন।
- রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট সমাধানে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও জাতীয় পরিকল্পনা।
অর্থনৈতিক পরিকল্পনা
শিল্প ও প্রযুক্তি
- ভারী শিল্প, প্রতিরক্ষা উৎপাদন ও আইটি খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি।
- ইলেকট্রনিক্স, ড্রোন প্রযুক্তি, সাইবার নিরাপত্তা ও AI-এ গবেষণা ও উৎপাদন কেন্দ্র স্থাপন।
কৃষি ও গ্রামীণ উন্নয়ন
- স্মার্ট কৃষি প্রযুক্তি প্রবর্তন, কৃষকদের জন্য সহজ শর্তে ঋণ ও বীমা।
- ফসল সংরক্ষণের জন্য প্রত্যন্ত অঞ্চলে আধুনিক কোল্ড স্টোরেজ ও বিপণন ব্যবস্থা।
উদ্যোক্তা ও কর্মসংস্থান - তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য ০% সুদে ঋণ, মেন্টরশিপ ও বাজার সংযোগ।
- ফ্রিল্যান্সিং, ই-কমার্স ও প্রযুক্তি দক্ষতা উন্নয়নে প্রতি জেলায় “স্কিল হাব”।
রোহিঙ্গা সংকটে অর্থনৈতিক সমাধান
- শরণার্থীদের জন্য অস্থায়ী কর্মসংস্থান ও দক্ষতা প্রশিক্ষণ।
শিক্ষা ও স্বাস্থ্যনীতি
শিক্ষা
● নৈতিকতা, কোডিং, বিজ্ঞান ও আন্তর্জাতিক ভাষার সমন্বয়ে জাতীয় পাঠ্যক্রম।
● মাদ্রাসা শিক্ষার আধুনিকীকরণ ও প্রযুক্তি দক্ষতার সাথে সমন্বয়।
● প্রতি উপজেলায় কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ও “ন্যাশনাল সার্ভিস প্রোগ্রাম”।
স্বাস্থ্য
● সর্বজনীন স্বাস্থ্যবীমা ও প্রতি জেলায় AI-চালিত ডায়াগনস্টিক সুবিধা।
● টেলিমেডিসিনের মাধ্যমে গ্রামীণ স্বাস্থ্যসেবা জোরদার।
________________________________________
পরিবেশ ও সাংস্কৃতিক নীতি
পরিবেশ সংরক্ষণ
- জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় সবুজ শক্তি ও বনায়ন প্রকল্প।
টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (SDGs) অর্জনে কার্যকর পদক্ষেপ।
সাংস্কৃতিক উন্নয়ন
- বাঙালি ঐতিহ্য, ভাষা ও সংস্কৃতির প্রচারে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক উদ্যোগ।
বাস্তবায়ন রোডম্যাপ
স্বল্পমেয়াদী (১-২ বছর)
তৃণমূল পর্যায়ে দলীয় সংগঠন গঠন:
○ প্রতিটি উপজেলায় অন্তত একটি স্থানীয় কমিটি গঠন করা (৬ মাসের মধ্যে)।
○ জেলা পর্যায়ে সমন্বয় সভা আয়োজন করা (প্রতি ৩ মাসে একটি)।
○ স্থানীয় নেতৃত্বের জন্য প্রশিক্ষণ কর্মশালা আয়োজন (প্রথম বছরে ৫টি)।
২০২৫ সালের নির্বাচনে ২০টি আসনে প্রার্থী মনোনয়ন:
○ সম্ভাব্য প্রার্থীদের চিহ্নিত করা (৩ মাসের মধ্যে)।
○ প্রার্থীদের জন্য নির্বাচনী কৌশল প্রশিক্ষণ প্রদান (৬ মাসের মধ্যে)।
○ নির্বাচনী প্রচারণার জন্য তহবিল সংগ্রহ করা (১ বছরের মধ্যে)।
“জনতার ভয়েস” ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম চালু:
○ প্ল্যাটফর্মের নকশা ও উন্নয়ন সম্পন্ন করা (৪ মাসের মধ্যে)।
○ পাইলট পরীক্ষা চালিয়ে প্রতিক্রিয়া সংগ্রহ করা (৬ মাসের মধ্যে)।
○ পূর্ণাঙ্গভাবে চালু এবং প্রচার শুরু করা (১ বছরের মধ্যে)।
মধ্যমেয়াদী (৩-৬ বছর)
৫০টির বেশি আসনে নির্বাচনী জোট গঠন:
○ সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনা শুরু করা (২ বছরের মধ্যে)।
○ জোটের শর্তাবলী চূড়ান্ত করা (৩ বছরের মধ্যে)।
○ যৌথ নির্বাচনী প্রচারণার পরিকল্পনা তৈরি করা (৪ বছরের মধ্যে)।
প্রযুক্তি পার্ক ও ভারী শিল্প স্থাপন:
○ সম্ভাব্য স্থান চিহ্নিত করা (২ বছরের মধ্যে)।
○ বিনিয়োগকারীদের সাথে চুক্তি স্বাক্ষর করা (৩ বছরের মধ্যে)।
○ নির্মাণ কাজ শুরু করা (৪ বছরের মধ্যে)।
○ প্রথম পর্যায়ের উদ্বোধন করা (৬ বছরের মধ্যে)।
দীর্ঘমেয়াদী (১০+ বছর)
যুক্তরাষ্ট্রীয় গণতান্ত্রিক কাঠামো প্রবর্তন:
○ জনমত সংগ্রহ ও গবেষণা পরিচালনা (৫ বছরের মধ্যে)।
○ সংবিধান সংশোধনের প্রস্তাব তৈরি করা (৭ বছরের মধ্যে)।
○ জাতীয় সংলাপের মাধ্যমে সম্মতি অর্জন (৯ বছরের মধ্যে)।
○ সংসদে বিল পাস করা (১০ বছরের মধ্যে)।
বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশিয়ার প্রযুক্তি ও অর্থনৈতিক হাবে রূপান্তর:
○ প্রযুক্তি শিক্ষা ও গবেষণায় বিনিয়োগ বৃদ্ধি (৫ বছরের মধ্যে)।
○ আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ আকর্ষণ করা (৭ বছরের মধ্যে)।
○ ইনোভেশন হাব ও স্টার্টআপ ইকোসিস্টেম গড়ে তোলা (১০ বছরের মধ্যে)।
○ আঞ্চলিক বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর করা (১২ বছরের মধ্যে)।